এখনো ‘হাওয়া’ বইছে
‘একটা সিনেমা ১০০ দিন ধরে দাপটের সঙ্গে চলছে। আমি মনে করি, এটা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আরেকটা মাইলফলক।
ছবিটি যে পরিমাণ দর্শক দেখেছেন, তাতে আমরা খুবই সন্তুষ্ট,’ প্রথম আলোকে বলছিলেন আলোচিত সিনেমা ‘হাওয়া’র নির্বাহী প্রযোজক অজয় কুণ্ডু।
গত ২৯ জুলাই দেশজুড়ে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি গত শনিবার ১০০ দিন পূর্ণ করেছে, এখনো রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স,
ব্লকবাস্টার সিনেমাস, লায়ন সিনেমাসসহ ছয়টি সিনেমা হলে হাওয়া বইছে। ‘সাদা সাদা কালা কালা’
গানের সুবাদে বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পশ্চিমঙ্গের মানুষের মুখ থেকে মুখে ছড়িয়েছে সিনেমার নাম।
কয়েক দশক ধরে ধুঁকতে থাকা ঢাকাই সিনেমায় গান নিয়ে এমন নজির খুব একটা দেখা মেলেনি।
গান নিয়ে হুল্লোড় হলেও সিনেমাটি দর্শকেরা গ্রহণ করবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন নির্মাতা ও প্রযোজকেরা।

দর্শকের আগ্রহ পরখ করতে ২৯ জুলাই মাত্র ২৪টি হলে মুক্তি দেওয়া হয় ছবিটি। মুক্তির আগেই অগ্রিম টিকিট কাটতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শকেরা।
মুক্তির পরপরই গানের মতোই সমানতালে ছুটে চলেছে হাওয়া।
দ্বিতীয় সপ্তাহে একলাফে ১৯টি হল বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টিতে, তৃতীয় সপ্তাহে ৪৯, চতুর্থ সপ্তাহে ৫৬ হল ছাড়ায়।
দেশে চালু থাকা বেশির ভাগ হলই সিনেমাটি চালিয়েছে; দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছে হাওয়া।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেডের প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন।
নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে আলোচনায় আসা সুমনের প্রথম সিনেমা এটি।
সিনেমাটি মানুষ এভাবে গ্রহণ করবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি সুমন। এ নির্মাতা বললেন,
‘আমাদের ছবি গণমানুষের কাছে যাবে, গ্রহণযোগ্যতা পাবে—এমন প্রত্যাশা করে সিনেমাটি বানাইনি। নিজেদের মতো করে গল্পটা বলেছি।
বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সিনেমাটি বানাইনি। যদিও বাণিজ্যিকভাবে সিনেমাটি আলোচিত হলো, মানুষ গ্রহণ করল। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটি শক্তি।’
গত সপ্তাহে কলকাতার নন্দনে হাওয়া নিয়ে দর্শকের উন্মাদনা দেখেছে বিশ্ব। দুপুরের শো দেখতে নন্দনের সামনে
ভোর থেকে দর্শকের সারি দেখা গেছে, অনেকে হলের ভেতরে সিট না পেয়ে মেঝেতে বসেও সিনেমাটি উপভোগ করেছেন।
টালিগঞ্জের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে নির্মাতা রাজ চক্রবর্তী—সবাই মেতেছিলেন হাওয়া বন্দনায়।
তুমুল আলোচিত সিনেমাটি কতটা ব্যবসা করেছে সিনেমাটি? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বক্স অফিস না থাকায় সিনেমার আয়–ব্যয়ের হিসাব বের করা দুরূহ।
ছবি মুক্তির পর থেকে প্রতিদিনের বা প্রতি সপ্তাহের আয়ের বিষয়টি দর্শক তো দূরের কথা, খোদ ছবির শিল্পী, পরিচালকেরাও জানতে পারেন না।
ছবির পরিবেশক বা প্রযোজকেরা প্রকাশ করেন না।
নির্বাহী প্রযোজক অজয় কুণ্ডু শুধু এতটুকু জানালেন, হাওয়া সিনেমায় যে পরিমাণ অর্থ লগ্নি করা হয়েছে, তা ইতিমধ্যে উঠে এসেছে।
দেশের বাইরে মুক্তির পর সেখান থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দেশে এসেছেন।
হাওয়ার সাফল্যে আগামী দিনে আরও সিনেমা প্রযোজনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে প্রযোজনা সংস্থা সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন