খোলা আকাশের নিচে সাজেকে পর্যটকদের রাত্রিযাপন
মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে টানা তিন দিনের ছুটিতে এবং
বড়দিনকে ঘিরে পর্যটকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধারণ ক্ষমতার প্রায়
দ্বিগুণ পর্যটক সাজেকে প্রবেশ করায় কটেজ-রিসোর্টে রুম সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
শীতের এই মৌসুমে হাজারো পর্যটককে সাজেকে কটেজ না পেয়ে শুক্রবার
দর্শনার্থীদের রিসোর্টের বারান্দায় ও রাস্তায় রাত কাটাতে হয়েছে।
সাজেকে বছর জুড়েই থাকে পর্যটকের চাপ। ছুটির দিনগুলোতে সেই
চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিনের টানা ছুটিতে
পর্যটকমুখর হয়ে উঠেছে সাজেক ভ্যালি। তবে পাহাড়ের রূপ উপভোগ করতে
গিয়ে এবারের টানা ছুটিতে পর্যটকের চাপে দেখা দিয়েছে আবাসন সঙ্কট।
ফলে বাধ্য হয়েই অনেক পর্যটককে রাত কাটাতে হচ্ছে গাড়িতে কিংবা মসজিদে অথবা স্থানীয় ক্লাবে।
ঢাকা থেকে আসা শাহ আলি (৩০), ময়মনসিংহ থেকে স্বপরিবারে আসা
সুলতান মিয়া (২৮) ও নেত্রকোনার পর্যটক আশরাফ আলি জানান,
ছেলে-মেয়েদের ছুটির কারণে চলে এসেছেন। এসে দেখেন কোনো হোটেলে রুম
খালি নেই। এমন অবস্থায় বিশাল বিপাকে পড়েছেন তারা।
সাজেকের নীল পাহাড়ি রিসোর্ট ও মর্নিং স্টার রিসোর্টের মালিক
আলফার্ড লুসাই জানান, বড়দিনকে সামনে রেখে প্রায় একমাস আগে রুম
বুক হয়েছে। আজ (শনিবার) অনেক পর্যটক পথে পথে ঘুরেও রিসোর্ট পাচ্ছেন না, এটা সত্যি কষ্টের।
সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, শনিবার প্রায় সাত হাজারের মতো পর্যটক সাজেকে এসেছেন।
যদিও সাজেকের ১১২টি কটেজে পর্যটক থাকতে পারেন চার হাজারের মতো।
সাজেকে আসা পর্যটকদের অনেকেরই ছিল না আগাম বুকিং।
ফলে রুম না পাওয়ায় অনেক পর্যটক বিকালেই ফেরত আসেন।
যারা থেকে গিয়েছেন তাদের অনেকেই বিভিন্ন কটেজের বারান্দায় ও
স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে রাত পার করেছেন।
সাজেকের হিল রিসোর্টের ম্যানেজার সুব্রত চাকমা বলেন, বুধবার থেকেই
সাজেকে অসংখ্য পর্যটক আসছেন। এই মুহূর্তে কোনো রিসোর্টেই রুম
খালি নেই। আমাদের রিসোর্টও দু’মাস আগে থেকেই শতভাগ বুকিং হয়ে আছে রোববার পর্যন্ত।
রুম না পেয়ে পর্যটকদের গাড়িতে রাত কাটানোর ব্যাপারে তিনি বলেন,
যখন খুব বেশি পর্যটকদের চাপ থাকে, তখন যারা আগাম বুকিং না দিয়ে
সাজেক আসেন তাদের রুম পেতে বেগ পেতে হয়। তখন তাদের হয়তো স্থানীয়দের বাড়িতে বা গাড়িতে থাকতে হয়।
সাজেক হিল ভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন,
বৃহস্পতিবার থেকে সাজেকে ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি পর্যটক এসেছেন।
সবগুলো কটেজ মিলিয়ে সাজেকে আড়াই হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে
পারেন না, কিন্তু এই কয়েক দিন পর্যটক সংখ্যা সব সময় চার হাজারের ওপরে।
বাড়তি পর্যটকদের এই চাপ সামাল দেয়া কষ্টকর। তাই অগ্রিম বুকিং না করে সাজেক না আসার পরামর্শ দেন তিনি।
সূত্র : ইউএনবি
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন