জি এম কাদের জাপা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এর আগে এ বিষয়ে গতকাল সোমবার শুনানি শেষ করে প্রধান বিচারপতি
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার আদেশের জন্য ধার্য করেন।
আদালতে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে
মামলাকারী জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাঈদ আহমেদ রাজা।
আর জি এম কাদেরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম।
জিয়াউল হক মৃধার আবেদনে গত ৩০ অক্টোবর জাতীয় পার্টির
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।
পরে ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিভিশন আবেদন করেন জি এম কাদের।
পরে আবেদনটি শুনানি করে গত ২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট
দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে জিয়াউল হক মৃধা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন।
এই আবেদন শুনে গত ৩০ নভেম্বর জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে
নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
চেম্বার আদালতের এই আদেশের ফলে জি এম কাদেরের
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল থাকে।
একই সাথে জিয়াউল হক মৃধার আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এ ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
গত ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক
এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন।
বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ১ নম্বর প্রতিপক্ষ (জিএম কাদের),
২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে যেন পার্টির কোনো
প্রকার সিদ্ধান্ত এবং কোনো কার্য গ্রহণ করতে না পারে সে মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
পরে এ আদেশ প্রত্যাহারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ
(জিএম) কাদেরের আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।
আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ খারিজাদেশের
বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের।
জেলা জজ এ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন রাখলেন।
কিন্তু আমরা ২৪ নভেম্বর দরখাস্ত দিয়ে বললাম ৯ জানুয়ারি রাখাতে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।
কারণ আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ আছে। অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।
তাই আজকেই শুনানি করেন। আমাদের ২৪ তারিখের দরখাস্তটা জেলা জজ রিজেক্ট করে দিলেন।
এর বিরুদ্ধে আমরা রিভিশন করেছি। আমরা হাইকোর্টে বলেছি ২৪ তারিখের আদেশটা অবৈধ।
কোর্ট রুল দিলো আর ৩০ অক্টোববের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক
রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা
বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের
২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার,
সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক
রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো: আজিজকে বহিষ্কার করেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন।
অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন