তবে কি ৭৯ মিনিটেই শেষ হচ্ছে নেইমারের বিশ্বকাপ অধ্যায়!
তিনি নাটক করেন, বাহানা খুঁজেন, অল্পতেই গড়িয়ে পড়েন;
সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের এমন বিস্তর অভিযোগ আছে নেইমারের দিকে।
বেশিরভাগই অভিযোগ তীর্যক, ব্যাঙ্গাত্মক। যার পরতে পরতে
বিদ্রুপ ও শ্লেষ মেশানো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটা
উল্লেখযোগ্য অংশ নেইমারকে রীতিমত অভিনেতা, কৌতুকাভিনেতা, ভাঁড় নামেও ডাকেন।
সাধারণত বড় তারকা, যারা মুহূর্তেই ম্যাচের রঙ বদলে দিতে পারে,
তাদের জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামে প্রতিপক্ষ।
স্বাভাবিকভাবেই নেইমারও বড় তারকাদেরই অংশ। ফলে
‘যেভাবেই হোক নেইমারকে থামাতে হবে’ এইটাই হয়ে উঠে মূলমন্ত্র।
যেখানে বাঁধা দিতে গেলে কখনো কখনো ফাউলের শিকার হতে হয়।
তবে নেইমারের সাথে তা যেন একটু বেশিই হয়।
তবে সেই ফাউলের বিপরীতে নেইমারের পার্শ্বপতিক্রিয়াটা যেন একটু বেশি।
অনেক সময় ব্যয় করেন নেইমার। তা নিয়ে অনেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য
করলেও ফুটবল বোদ্ধারা মনে করেন, ফাউল থেকে বেঁচে থাকতে এই
কৌশল অবলম্বন করেন নেইমার। মূলত, ২০১৪ বিশ্বকাপে আঘাতপ্রাপ্ত
হয়ে মাঝ পথেই বিশ্বকাপ ছেড়ে যাবার পর থেকেই এমনটা করে থাকেন নেইমার।
তবুও তার প্রতি ফাউল যেন কমছেই না। প্রতি ম্যাচেই যেন নেইমারকে
থামাতে ফাউলের আশ্রয় নেয় প্রতিপক্ষ। অন্ততঃ বিশ্বকাপের মতো
আসরে তা স্পষ্ট। প্রমাণ স্বরূপ কাতার বিশ্বকাপে গতকালের ম্যাচটাই
দেখুন। গত ম্যাচে সার্বিয়া মোট ১২টি ফাউল করেছে, যেখানে ৯টি
ফাউলই হয়েছে নেইমারের উপর! অর্থাৎ এক ম্যাচেই ৯ ফাউলের শিকার নেইমার।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও সর্বোচ্চ ফাউলের শিকার ছিলেন নেইমার।
মাত্র চার ম্যাচ খেলেই সর্বোচ্চ ফাউলের শিকারে পরিণত হন তিনি।
২৬টি ফাউল করা হয় তাকে। যা লিওনেল মেসি বা ক্রিস্টিয়ানো
রোনালদোর চাইতে অনেক বেশি। মেসির বিরুদ্ধে ফাউল হয়েছে ১৫ বার, আর রোনালদোর বিরুদ্ধে ১৪ বার।
এর আগে ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপেও নেইমারের বিরুদ্ধে ফাউল
হয়েছিল ১৮টি। মেসির বিরুদ্ধেও সংখ্যাটা একই ছিল।
তবে মেসি খেলেছিলেন সাতটি ম্যাচ। আর নেইমার পঞ্চম ম্যাচও শেষ
করতে পারেননি। ফাউলের শিকার হয়েই শেষ হয়ে যায় নেইমারের বিশ্বকাপ।
শেষ হয়ে যেতে পারতো ফুটবল ক্যারিয়ারও। তবে সেই যাত্রায় বেঁচে যান নেইমার।
সেবার তবুও পাঁচটি ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন, এবার হয়তো প্রথম
ম্যাচেই থেমে যেতে পারে তার কাতার বিশ্বকাপ অধ্যায়।
ডান পায়ের গোড়ালি মচকে গেছে নেইমারের। ৭৯ মিনিটে
চোটে পড়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি, অতঃপর বেঞ্চে বসে
কাঁদতেও দেখা যায় তাকে। ব্রাজিলের সমর্থকেরা ততক্ষণে যা বোঝার
বুঝে নিয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপে নেইমারকে আর দেখা যাবে তো!
ইনজুরি কাটিয়ে ফিরতে না পারলে কাতার বিশ্বকাপে মাত্র ৭৯ মিনিট
খেলার অভিজ্ঞতা নিয়েই দেশে ফিরতে হবে তাকে। তাছাড়া তার কথা মতো
এটিই যদি তার শেষ বিশ্বকাপ হয়, তবে আর কখনো বিশ্ব মঞ্চে দেখা যাবে
না ব্রাজিলিয়ান এ তারকাকে। তাইতো এমন বিদায় নিশ্চিয় সহজে মেনে নিবে না কোটি ভক্ত।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন