দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পদ কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
দেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পদ কেনার অভিযোগ
অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক),
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের
অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরের) প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের
সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার
রুলসহ এ আদেশ দেন। অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতি জানিয়ে ৩০ দিনের
মধ্যে চারটি সংস্থাকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
‘দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির হাজার প্রপার্টি’ শিরোনামে ১০ জানুয়ারি একটি
দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের
আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন এবং
দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন।
এ ছাড়া আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক শুনানিতে অংশ নেন।
রুলে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বেআইনিভাবে দুবাইয়ে মানিলন্ডারিং করে
বাড়ি, ফ্ল্যাট বা অন্য কোনো সম্পদ গড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা
নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আইন ভঙ্গ করে গড়া এসব বাড়ি ও অন্য সম্পদে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া
হয়েছে রুলে। এর আগে বিদেশি ব্যাংকগুলো, বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে
বাংলাদেশের অনেক নাগরিক ও কোম্পানির জমা রাখা পাচারের অর্থ উদ্ধারে
যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে
সুবীর নন্দী দাসসহ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী একটি রিট করেন।
এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
ওই রিটের ধারাবাহিকতায় দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের সম্পত্তি কেনার অভিযোগ
অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করা হয়। ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে-গোপনে বিপুল
মূলধন স্থানান্তরিত হচ্ছে দুবাইয়ে। এই অর্থ পুনর্বিনিয়োগে ফুলেফেঁপে উঠছে
দুবাইয়ের আর্থিক, ভূসম্পত্তি, আবাসনসহ (রিয়েল এস্টেট) বিভিন্ন খাত।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স
স্টাডিজের (সি৪ এডিএস) সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স
অবজারভেটরি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি।
২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি সম্পত্তি কেনার তথ্য
পাওয়া গেছে। কাগজে-কলমে এর মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার।
তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরও
অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের
সত্যতা নিশ্চিত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদককে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন