ছাত্র অধিকার পরিষদের তিন নেতা চূড়ান্ত পরীক্ষায় (স্নাতক দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ) অংশ নিতে পারছেন না৷
বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভা করতে গিয়ে দুই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন এই তিন নেতা।
এর মধ্যে দুজনের আজ সোমবারও একটি পরীক্ষা ছিল। চলতি মাস ও আগামী মাসে তাঁদের আরও বেশ কয়েকটি পরীক্ষা রয়েছে।
আরেক নেতার একটি পরীক্ষা রয়েছে আগামী বুধবার।কারাগারে থাকায় এই তিন নেতার সামনের পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণও অনিশ্চিত।
এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার ছাত্র অধিকারের ২৪ নেতা-কর্মীর জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নিতে না–পারা ছাত্র অধিকার পরিষদের এই তিন নেতা হলেন
সংগঠনের ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ রাকিব ও সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ হোসাইন এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী
সরকারি কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু মো. কাউছার। তাঁদের মধ্যে রাকিব রসায়ন ও কাউছার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আর
ইউসুফ অর্থনীতি বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়েন। ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের
প্রত্যাশা, আগামীকাল জামিন পাবেন দুই মামলায় গ্রেপ্তার থাকা সংগঠনের ২৪
নেতা-কর্মী।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত
রুটিন পর্যালোচনা ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা
গেছে, ঢাকা কলেজের ছাত্র রাকিবের রসায়ন-৭২৪১ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা ছিল
আজ সকাল ৯টা থেকে। কিন্তু কারাগারে থাকায় তিনি পরীক্ষাটি দিতে পারেননি।
আগামী ১৩, ১৬ ও ২০ নভেম্বর যথাক্রমে তাঁর রসায়ন-৭২০১, ৭২২২ ও ৭২৪১
(নন-মেজর) কোর্সের পরীক্ষা আছে।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র কাউছারের রাষ্ট্রবিজ্ঞান-২০৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা
ছিল আজ সকাল ৯টা থেকে। আজকের পর ১৬, ২০, ২৪ ও ২৭ অক্টোবর তাঁর
যথাক্রমে ২০৬, ২০৭, ২০৮ ও ২২১৯০৯ (নন-মেজর) নম্বর কোর্সের পরীক্ষা আছে।
ঢাকা কলেজের ইউসুফের অর্থনীতি-২৩২২০৭ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা রয়েছে ১২ অক্টোবর।
গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দলের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ
বলেন, ‘রাকিব, কাউছার ও ইউসুফ তিনজনই নিয়মিত শিক্ষার্থী।
অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার কারণে আজকে রাকিব ও কাউছার পরীক্ষায়
অংশগ্রহণ করতে পারছেন না, ফলে তাঁদের এক বছর লস হয়ে যাচ্ছে।
আর ইউসুফ বুধবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, তা
অনিশ্চিত। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিক্ষাজীবন থেকে তাঁরা এক বছর
পিছিয়ে যাচ্ছে।’গত শুক্রবার বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের’ ব্যানারে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার তিন
বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সেখানে হামলা করে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ।
হামলায় পরিষদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে গিয়েও
তাঁদের পেটায় ছাত্রলীগ। বিকেলে মেডিকেল থেকে পরিষদের নেতা-কর্মীদের
আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশ।
এরপর ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন ও আমিনুর রহমান গত শুক্রবার রাতেই
শাহবাগ থানায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৫ নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৪০
থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন।
দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার সকালে ছাত্র অধিকারের ২৪ নেতা-কর্মীকে
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠায় শাহবাগ থানার পুলিশ। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন