দেশের প্রসাধনীর বাজারে ছয়টি অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এসব অনিয়মের কারণে ভোক্তা তথা ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন।
সম্প্রতি বাজার তদারক করে এসব অনিয়ম পাওয়া গেছে।
এসব অনিয়ম তুলে ধরে ভোক্তা অধিদপ্তর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে অনিয়ম রোধে সাত দফা সুপারিশও করা হয়েছে।
ভোক্তা অধিদপ্তর প্রসাধনীর বাজার তদারকির মাধ্যমে যেসব অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে,
তার মধ্যে রয়েছে পণ্যের মোড়কে খুচরা বিক্রয়মূল্য,
উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ না থাকা; খুচরা বিক্রেতার পক্ষ থেকে
খুচরা বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ; খুচরা বিক্রয়মূল্য কেটে বেশি দাম লিখে দেওয়া;
বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য দেশে তৈরি করে বিদেশি বলে বিক্রি করা;
মানহীন পণ্য বিক্রি এবং অনুমোদনহীন ফেস ক্রিম ও রং ফরসাকারী ক্রিম বিক্রি।
অধিদপ্তর বলছে, নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনহীন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী
ব্যবহারের কারণে চর্মরোগসহ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বলে
বিভিন্ন সময়ে ভোক্তাদের কাছ থেকে অভিযোগও পাওয়া যায়।
এ ছাড়া যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রসাধনী আমদানি না হওয়ায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
পণ্যের মোড়কে খুচরা মূল্য উল্লেখ না থাকায় ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন।
আবার বৈধ ও অবৈধ আমদানির ক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতা
তৈরি হওয়ায় বৈধ আমদানিকারকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাজার তদারকিতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রসাধনীর আমদানিকারক,
বাজারজাতকারী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গত ১২ অক্টোবর সভা করে ভোক্তা অধিদপ্তর।
সেখানে প্রসাধনীর আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানান, লাগেজ
ব্যবসায়ীরাই মূলত কম শুল্ক দিয়ে বিদেশি পণ্য আমদানি করেন।
আবার কিছু বিদেশি প্রসাধনী আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি বেশি বলে কিছু
সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী দেশে ওই সব পণ্যের নকল তৈরি করে বিদেশি বলে বিক্রি করে থাকেন।
তাই কাস্টমস–সংক্রান্ত জটিলতা দূর করা গেলে নকল পণ্য তৈরির
প্রবণতা কমবে বলে সভায় ব্যবসায়ীরা জানান।
ওই সভার আলোচনা ও বাজার তদারকিতে প্রাপ্ত অনিয়ম তুলে ধরে ভোক্তা
অধিদপ্তর সরকারের কাছে সাত দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে।
এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রসাধনী আমদানি রোধে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তদারকি বাড়ানো; পণ্যের মোড়কে খুচরা বিক্রয়মূল্য,
উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করার বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরসহ
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি অব্যাহত রাখা; সঠিক মানদণ্ড নিশ্চিত
করতে বিএসটিআইয়ের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ; নকল বিদেশি পণ্য
বিক্রি রোধে গোয়েন্দা তদারকি বাড়ানো; অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে
ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান জোরদার করা; আমদানিকারকেরা
যাতে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য তদারকি বাড়ানো
এবং ভোক্তা অধিদপ্তর ও অংশীজনদের নিয়ে বিশেষ সভা করা।
ভোক্তা অধিদপ্তর বলছে, পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকি রোধ
এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বাজারে নিরবচ্ছিন্ন তদারকি নিশ্চিত করা
গেলে প্রসাধনীর বাজারে সুষম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।
পাশাপাশি প্রসাধনী ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তা স্বার্থও সুরক্ষিত হবে।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন