বিখ্যাত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্টের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিনেতা-অভিনেত্রীর মামলা
উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘রোমিও জুলিয়েট’ অবলম্বনে সারা দুনিয়াতেই নির্মিত হয়েছে অনেক চলচ্চিত্র।
তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ১৯৬৮ সালে মুক্তি পাওয়া ফ্রাঙ্কো জেফিরেল্লির ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’।
ছবিটি বক্স অফিসে হিট হয়, দুই ক্যাটাগরিতে অস্কারও জেতে।
প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করা লিওনার্দো হোয়াইটনিং ও ওলিভিয়া হাসি
সেরা নবাগত অভিনয়শিল্পী হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জেতেন।
তবে পাঁচ দশকের অনেক সময় পর ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট
পিকচার্সের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা ঠুকে দিয়েছেন হোয়াইনিং ও হাসি।
তাঁদের অভিযোগ, ছবিটিতে তাঁদের দিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে নগ্ন দৃশ্যে
অভিনয় করানো হয়েছে, যা যৌন হেনস্তার শামিল।
ছবিটি মুক্তির পর প্রশংসিত হলেও বেডরুমের একটি দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
দৃশ্যটিতে অভিনয়শিল্পীদের উন্মুক্ত নিতম্ব ও ঊর্ধ্বাঙ্গ দেখানো হয়েছিল।
ছবিটির শুটিংয়ের সময় হোয়াইনিংয়ের বয়স ছিল ১৬ বছর, হাসির ১৫।
তাঁদের বয়স এখন যথাক্রমে ৭২ ও ৭১। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের
সান্তা মনিকার একটি আদালতে প্যারামাউন্টের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা,
যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি করেছেন।
মামলাটি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
মামলাটিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সিনেমাটিতে বয়ঃসন্ধিকালীন শিশুদের
নগ্ন দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তাঁদের যৌন নিপীড়ন করেছে।
মামলার আবেদনে হোয়াইটনিং ও হাসি বলেছেন, ওই ঘটনা কয়েক
দশক ধরে তাঁদের মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুই অভিনয়শিল্পীর করা মামলাটিতে সিনেমার পরিচালক জেফিরেল্লিকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
হোয়াইটনিং ও হাসি বলেছেন, পরিচালক তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে
সিনেমাটিতে কোনো নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে না; ঘনিষ্ঠ দৃশ্যটিতে পরনে পাতলা অন্তর্বাস থাকবে।
কিন্তু শুটিংয়ের সময় পরিচালক তাঁদের নগ্ন হয়ে অভিনয় করতে বলেন।
এটাও বলেন যে এভাবে না করলে সিনেমাটি ব্যবসা করতে পারবে না।
পরিচালক জেফিরেল্লি ২০১৯ সালেই মারা গেছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তাঁর মন্তব্য জানা সম্ভব নয়।
হোয়াইটনিং ও হাসির ব্যবসায়িক মুখপাত্র টনি ম্যরিনোজ্জি বলেছেন, ‘তাঁরা পরিচালককে বিশ্বাস করেছিলেন।
তাঁদের বয়স তখন ১৬; এ ছাড়া আর কী করতে পারতেন? তাঁদের কাছে অন্য বিকল্পও ছিল না।’
এখন মামলা করলেও ২০১৮ সালে ভ্যারাইটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বহুল
আলোচিত দৃশ্যটির পক্ষেই কথা বলেছিলেন হাসি, ‘আমার বয়সী কোনো
অভিনেত্রী আগে এ ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করেননি, পরিচালক খুবই রুচিশীলভাবে দৃশ্যটি ধারণ করেছিলেন।’
২০১৮ সালে ফক্স নিউজকে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে হাসি
বলেছিলেন, সিনেমাটির দৃশ্যটি তখন যুক্তরাষ্ট্রে বড় ট্যাবু ছিল,
কিন্তু ইউরোপের সিনেমায় এ ধরনের দৃশ্য ছিল সাধারণ ঘটনা।
হাসি আরও বলেছিলেন, ‘এটা কোনো বড় ব্যাপার ছিল না, লিওনার্দোও লজ্জা পাননি।
শুটিংয়ের মাঝখানে তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমাদের গায়ে কোনো পোশাক নেই।’
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন