বিশ্বকাপ ও উইলিয়ামস ভাইদের গল্প
ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছেন স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাথলেটিক বিলবাও ফরোয়ার্ড ইনাকি এবং নিকো উইলিয়ামস।
এই বিশ্বকাপে দুইটি ভিন্ন দেশের হয়ে খেলবেন এই দুই ভাই।
বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামস ঘানার হয়ে খেলবেন এবং তার ছোট ভাই নিকো উইলিয়ামস স্পেনের হয়ে খেলবেন।
ঘানার কোচ গত সোমবার ইনাকি উইলিয়ামসের নাম ঘোষণা করেন।
আর গত সপ্তাহেই স্পেন দলে নিকো উইলিয়ামসের নাম ঘোষণা করা হয়।
তবে এই উইলিয়ামস ভাইদ্বয়ই বিশ্বকাপে দুটি বিভিন্ন দেশের হয়ে
খেলা প্রথম ভাইদ্বয় নন। এর আগেও ২০১০ বিশ্বকাপ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে
এরকম করেছিলেন বোয়াটেং ভাইদ্বয়। ছোটো ভাই জেরোম বোয়াটেং
খেলেছিলেন জার্মানির সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে, আর বড় ভাই
কেভিন-প্রিন্স বোয়াটেং খেলেছিলেন ঘানার এটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে।
বিশ্বকাপে মুখোমুখিও হয়েছেন বোয়াটেং ভাইরা। তাদের বাবা ঘানার
কাছাকাছি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু এই দুই ভাই জার্মানিতে আলাদা মায়ের কাছে বেড়ে ওঠেন।
অন্যদিকে উইলিয়ামস ভাইদের জন্ম স্পেনে। তাদের পিতা-মাতা দুজনই
ঘানায় জন্মগ্রহণ করেন। একটি উন্নত জীবনের সন্ধানে তারা ইউরোপে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছিলেন।
ইনাকি উইলিয়ামসের মতে, স্পেনে পৌঁছানোর জন্য, তাদেরকে একটি
ট্রাকের পিছনে চড়তে হয়েছিল এবং সাহারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে হয়েছিল।
কিন্তু স্পেনে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় এই দম্পতিকে আটক করা হয়।
ইনাকি ও নিকো উইলিয়ামসের মা তখন গর্ভবতী ছিলেন।
একজন দাতব্য কর্মীর পরামর্শ নেয়ার পরে তারা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক আশ্রয়
পেয়েছিলেন। সেই দাতব্য কর্মী সবাইকে বলেছিলেন যে এই দম্পতি
লাইবেরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে গেছে। এরপর এই দম্পতি বাস্ক
কান্ট্রি অঞ্চলে চলে যান যেখানে তাদের উভয় ছেলের জন্ম হয়।
ইনাকি উইলিয়ামস গত মৌসুমে স্প্যানিশ লিগে সবচেয়ে বেশি ২০৩টি ম্যাচ
খেলার রেকর্ড ভেঙেছেন। ২০১৬ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিলেও
এরপর আর তাকে স্পেন দলে জন্য ডাকা হয়নি, তাই তিনি আফ্রিকান দেশ
ঘানার হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন। ফরোয়ার্ড হিসেবে ঘানার হয়ে অভিষেকের
পর তিনি সেপ্টেম্বরে নিকারাগুয়ার বিপক্ষে এবং পরে ব্রাজিলের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে খেলেন।
অন্যদিকে নিকো উইলিয়ামস, গত সেপ্টেম্বরে স্পেনের হয়ে জাতীয় দলে
ডাক পান। সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নেশনস লিগের একটি ম্যাচে তার
অভিষেক হয় এবং তার দ্বিতীয় ম্যাচে বেঞ্চ থেকে নেমে, সতীর্থ আলভারো
মোরাতার এসিস্ট থেকে গোল সেট করেন, এই গোলেই স্পেন শেষ চারে পৌঁছে যায়।
এই বিশ্বকাপে যেহেতু স্পেন এবং ঘানা কাতারে ভিন্ন গ্রুপে রয়েছে,
তাই উইলিয়ামস ভাইরা অন্তত কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না।
ইনাকি উইলিয়ামসের মতে, ‘আশা করি আমাদের দেখা হবে, এবং
ঘানা জিতবে।’ অন্যদিকে নিকো উইলিয়ামসের ভাষায় ‘আমরা এই
ব্যাপারে পরে ভাববো। নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের পর আমরা শার্ট বিনিময় করব।’
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন