• শুক্র. জুন ৯, ২০২৩

ভারতের দুই রাজ্যে রামনবমীতে সংঘর্ষ

মার্চ ৩১, ২০২৩

ভারতের দুই রাজ্যে রামনবমীতে সংঘর্ষ

বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গজুড়ে পালিত হয় রামনবমী। প্রায় সব জেলাতেই মিছিল

হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে হাওড়া জেলায় রামনবমীর মিছিলেন দুই

গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একটি গোষ্ঠীর লোকজন ও বাড়িঘর লক্ষ করে

হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রেও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা

ঘটেছে। সেখানে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাওড়ার শিবপুর থানা এলাকায় একটি মিছিল থেকে সমস্যার সূত্রপাত বলে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। দুপুর নাগাদ এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয় এবং

ঘন ঘন বোমা পড়তে শুরু করে। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। এ সময় কয়েকটি গাড়িসহ বিভিন্ন

জায়গায় দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় কিছু জায়গায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র‍্যাফ

(র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স)। পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী হাওড়ার রামরাজাতলায় রামনবমীর

শোভাযাত্রায় অংশ নেন। রামরাজাতলা থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শিবপুরে সংঘর্ষ হয়।

এদিকে হাওড়ার ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,

‘যারা আজকে দাঙ্গা করেছে, যতই মামলা করুক আর হামলা করুক, কোনো

অজুহাত আমি শুনব না। পুলিশ অনেক কাজ করে, তারা দুদিকের সম্পর্ক বজায়

রাখতে গিয়ে অনেক সময় ভয় পেয়ে যায়। আমি পরিষ্কার বলছি, আজকের ঘটনায়

যারা দায়ী, যারা (বাইরের লোক এলাকায়) ঢুকতে দিয়েছে, আমি তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

মিছিলের আয়োজক সংগঠনের তরফে সম্পাদক সুরেন্দ্র বর্মা বলেন,

‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল বের করেছিলাম। হঠাৎই বাইরে থেকে কিছু লোক

এসে আমাদের ওপর চড়াও হয়। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সেই সময় হঠাৎই বোমা ছোড়া হয়।’

এদিকে কলকাতাতেও শোভাযাত্রা ও মিছিল হয়েছে। প্রায় সব মিছিলে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল।

গুজরাটের বরোদায় রামনবমীর মিছিলে উত্তেজনা

গুজরাটের বরোদায় রামনবমীর মিছিলে পাথর ছোড়ার ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ফতেপুরা এলাকায় মিছিলে পাথর ছোড়ার ঘটনা নিয়ে

গোলমাল হলেও নির্দিষ্ট রুটেই মিছিল পার হয়ে যায়। তবে এতে কয়েকটি

গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ আহত হননি।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অধীন বজরং দলের এক স্থানীয় নেতা সাংবাদিকদের বলেছেন,

প্রতিবছর এই রুটেই মিছিল যায়। তবুও পুলিশ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে না।

তবে পুলিশের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ফতেপুরা এলাকায় একটি

মসজিদের পাশ দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময়ে স্থানীয় মানুষ বাইরে বেরিয়ে আসে।

এ সময় বচসা হয়। এটা কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

মিছিলে উত্তেজনা মহারাষ্ট্রে

মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গাবাদের শম্ভাজিনগরে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে

রামনবমীর মিছিল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। রামনবমীর মিছিল ঘিরে

বুধবার রাত থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। মসজিদের পাশে উচ্চ স্বরে মাইকে গান বাজানো হয়।

বৃহস্পতিবার গান বাজিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজনা ছড়ায় বলে

গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কিরাদপুরা এলাকায় দুই দল যুবকের মধ্যে প্রথমে মারপিট

শুরু হয়। কিছুক্ষণ স্লোগান চলে এবং তারপর পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে। বহু

গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা

সহিংসতা চলার পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘আমরা এই ভয় পাচ্ছিলাম

যে দাঙ্গা হতে যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে স্বরাষ্ট্র বিভাগ বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না।’

আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন