• সোম. জুন ৫, ২০২৩

মেসিতে ভর করে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

ডিসে ৪, ২০২২

মেসিতে ভর করে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

জাদুকরের পায়ে যেন জাদুর প্রদর্শনী। আজ মাঠ জুড়েই ছিল তার বিচরণ।

খেলেছেন, খেলিয়েছেন। অধিনায়কের মতোই সম্মুখ থেকে

নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভাগ্য সহায় হলে হয়তো আরো বেশ কিছু

গোলের কারিগরও হতে পারতেন তিনি। তবে যাহোক, তার

হাত ধরেই শুরু যেই উপাখ্যান, তাতেই শেষ হলো হলুদ ক্যাঙ্গারুদের বিশ্বকাপ অধ্যায়।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা।

লিওনেল মেসি ও জুলিয়ান আলভারেজের গোলে কাতার

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত

করল লা আলবিসেলেস্তরা। আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে

শেষ ষোলোর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টিনা।

বিশ্বকাপে এবারই প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল উভয় দল।

এদিকে নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলছেন লিওনেল মেসি।

আজকের ম্যাচটি তার ক্যারিয়ারের ১০০০তম ম্যাচ।

মাইলফলকস্পর্শী এই ম্যাচে আজই প্রথমবারের মতো

বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে গোল করতে সক্ষম হয়েছেন

মেসি। ম্যাচে নামার সাথে সাথেই নতুন আজ এক রেকর্ড

গড়েছেন লিওনেল মেসি। এই পর্যন্ত বার্সেলোনার হয়ে

৭৭৮, পিএসজি’র হয়ে ৫৩ এবং আর্জেন্টিনার হয়ে ১৬৯টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা বল নিয়ন্ত্রণে আধিপত্য

প্রতিষ্ঠা করলেও খুব কার্যকর কোনো আক্রমণে যেতে

পারেনি দলটি। ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিট পার হয়ে গেলেও

দুদলের কেউই একে অপরের অর্ধে কোনো শট নিতে

পারেনি। ১৮ মিনিটের মাথায় প্রথম আক্রমণে যেতে সক্ষম

হয় আর্জেন্টিনা। কিন্তু পাপু গোমেজের বক্সের বাইরে

থেকে নেয়া শটটি বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।

ম্যাচের ২০ মিনিট সময় পার হলে অবশেষে বল পেতে শুরু করে সকারুরা।

এ সময় অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার আজিজ বেহিখ লেফট

ফ্ল্যাংক ধরে আর্জেন্টিনার পোস্টের কাছে যাওয়ার চেষ্টা

করলে তাকে থামিয়ে দেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার

ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। অ্যাংহেল ডি মারিয়া না থাকার

অভাবটা বেশ অনুভূত হচ্ছিল এ সময়ে। লেফট ফ্ল্যাংক

ধরে কোনো জোরালো আক্রমণে যেতে পারছিল না আর্জেন্টিনা।

অবশেষে ৩৫তম মিনিটে ডেডলক ভাঙে। নিকোলাস

ওতামেন্দির বাড়ানো পাসে বক্সের বাইরে থেকে লং রেঞ্জের

এক চোখ ধাঁধানো শটে গোল করেন লিওনেল মেসি।

বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে এটিই মেসির প্রথম গোল।

গোলের হিসেবে এটি তার ক্যারিয়ারের ৭৮৯তম গোল।

গোল পেয়ে আত্মবিশ্বাসী আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধের শুরু

থেকেই খেলা গুছিয়ে আনতে শুরু করে।

কিছুক্ষণ পরে নিকোলাস ওটামেন্ডির ভুলের জন্য গোল

খেয়ে বসলেও বসতে পারত আর্জেন্টিনা। তিনি ধীরগতিতে

ব্যাক পাস দিয়েছিলেন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে।

সকারুদের স্ট্রাইকাররা ধীর গতিতে বল গড়াতে দেখে বল

লুফে নেয়ার জন্য এগিয়ে এলে দ্রুতগতিতে বল সংগ্রহ

করে দলকে বিপদমুক্ত করেন মার্টিনেজ।

৫৭ মিনিটের মাথাতেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায়

আকাশী-নীল শিবির। এবারে অজি ডিফেন্ডার কি রোলেস

ব্যাক পাস দিয়েছিলেন গোলকিপার ম্যাট রায়ানকে। ডি

বক্স ছেড়ে বল ধরতে রায়ান বের হতেই তার সামনে থেকে

ছোঁ মেরে বল নিয়ে অরক্ষিত গোলপোস্টে বল জড়ান

জুলিয়ান আলভারেজ। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার দ্বিতীয় গোল।

৭৭ মিনিটের মাথায় একটি গোল পরিশোধ হয় অস্ট্রেলিয়ার।

বদলি খেলোয়াড় ক্রেইগ গুডউইন আর্জেন্টিনার গোলবার

লক্ষ্য করে শট নেন। সেই শট আটকাতে এনজো

ফার্নান্দেজ সামনে চলে এলে তার গায়ে লেগেই গোল ঢুকে

যায় আর্জেন্টাইনদের বারে। ফলে এনজো ফার্নান্দেজের

আত্মঘাতী গোল হিসেবে ধরা হয়েছে এটি।

৮২ মিনিটের মাথায় আজিজ বেহিখ নিজের একক

প্রচেষ্টায় মিডফিল্ড থেকে ডিবক্সে ঢুকে যান বল নিয়ে।

কিন্তু তার শটটি ব্লক করে দেন লিয়েসান্দ্রো মার্টিনেজ।

এদিকে এক গোল হজমের পর এবারে আক্রমণে চাপ

বাড়ায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি

হলেও সেগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা।

ম্যাচের অতিরিক্ত ৭ মিনিটে তাদের একের পর এক সুযোগ

নষ্ট করে দেয় অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স। শেষ পর্যন্ত আর

কোনো গোল না হলে ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় আর্জেন্টিনা।

ফলে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।

আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন