সখিপুর আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত
সখীপুরের প্রায় প্রতিটি বাগান এবং বাড়ির আনাচে-কানাচে চোখে পড়ছে আম গাছের ডগায় ডগায় ফোটা মুকুল।
সাথে লিচু গাছগুলোতেও কুঁড়ির দেখা মিলেছে। কাঁঠালের মুচিও যেন উঁকি দিচ্ছে নতুন পাতার খোলস ভেদ করে।
প্রকৃতির এ মনোমুগ্ধকর পরিবর্তনই যেন জানান দিচ্ছে মধুমাস আসছে।
আবহাওয়া ভালো থাকায় আম গাছে এবার আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। বাতাসে ভেসে আসছে মনোমুগ্ধকর মৌ মৌ ঘ্রাণ।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে।
তবে চলতি মাসের শেষের দিকে প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটতে শুরু করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
যেসব গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে, বাগান মালিকরা পরিচর্যাও শুরু করেছেন ব্যাপক হারে।
বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আম চাষি ও বাগান মালিকরা।
আম বলতে এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীকেই বোঝাত। কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন।
লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় প্রতি বছর সখীপুর উপজেলায় বাড়ছে আমের আবাদ।
টাঙ্গাইল জেলার যত আম বাগান তার সিংহভাগ আম বাগান রয়েছে সখীপুর উপজেলায়।
বর্তমানে যে পরিমাণ আমের মুকুল আসছে তার কিছু নষ্ট হয়ে যায়, কারণ প্রথমত ঘন কুয়াশা, এরপর শিলাবৃষ্টি বা অতি খরা।
প্রকৃতির সাথে লড়াই করেই আম গাছকে টিকে থাকতে হয় ফলের জন্য।
গ্রামের প্রচলিত কথায় আছ ‘কুয়োয় (কুয়াশা) আমের ক্ষয়, তেঁতুলের কিছু নয়’ অর্থাৎ ঘন কুয়াশায় আমের মুকুল ঝরে যায়, তেঁতুলের কিছুই হয় না।
তাই মুকুল যতই ঝরুক শেষ পর্যন্ত যতটুকু টিকে থাকে তাতেই ১০/১২টি করে আম ধরে।
এই আমের ভারই সইতে পারে না অনেক গাছ। আম বাগানে দেখা যায় অপূর্ব দৃশ্য।
অনেক উঁচু গাছেরও মাটি থেকে ২/৩ ফুট ওপরেই ঝুলে থাকে থোকা থোকা আম।
কখনো শাখায় বাঁশের ঠেকা দিতে হয়। হাতের নাগালের এই আম কেউ যেন ছিঁড়তে না পারে। আমের মুকুলেই জানান দেয় ফলন কেমন হবে।
খনার বচনে আছে, ‘আমে ধান, তেঁতুলে বান’।
অভিজ্ঞ আম চাষী রফিক মিয়া দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, ঝড় ও শিলা-বৃষ্টি না হলে আশা করা যাচ্ছে এবারো আমের ফলন ভালো হবে।
আমের মুকুল ভালো এসেছে বাগানগুলোতে। আম্রমঞ্জুরি শুভ বার্তা বয়ে আনবে সবারই মনে।
উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, মুকুল আসার সাথে
এবং মুকুল ধরার সময় প্রয়োজনীয় পরিচর্চা করা গেলে আমের মুকুল সংরক্ষণ এবং
পোকার হাত থেকে আমকে রক্ষা করা সম্ভব। আম চাষে আগ্রহী কৃষকদের আমরা
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ভালো ফলনের জন্য কিভাবে কি রকম করতে হবে তার
পরামর্শ দিয়ে থাকি। তবে গতবছরের তুলনায় সখীপুরে এবার আরো আম ও
লিচু চাষ বেড়েছে এবছর সখীপুরে ২৪০ হেক্টর জমিতে আম ও ২০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে।
আরও আপডেট নিউজ জানতে ভিজিট করুন