কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল খেয়ে বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকিতে মানব শরীর। হাড় ক্ষয়, কিডনি ড্যামেজ, কিডনিতে পাথর, লিভারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘদিন কেমিক্যালযুক্ত কোনো ফল খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুরসহ দেশের বেশির ভাগ কাঠাল উৎপাদিত এলাকায়, কাঁঠালের মধ্যে রড ঢুকিয়ে ছিদ্র্র করে প্রবেশ করা হচ্ছে ক্ষতিকর কেমিক্যাল। সখীপুর উপজেলার বড়চওনা, মহানন্দপুর, কুতুবপুর, কচুয়া, নলুয়া, তক্তারচালাসহ দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে এভাবে কেমিক্যাল প্রবেশ করানো হচ্ছে। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এই কেমিক্যালে পাকানো কাঁঠাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে। এক রাতের মধ্যে যেন কাঁঠাল পেকে যায় তাই এ পদ্ধতিতে এক ধরনের কেমিক্যাল দেওয়া হয় বলে জানান কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন হাট বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাট-বাজারে কাঁচা কাঁঠাল নিয়ে আসেন সাধারণ বিক্রেতা ও গ্রামের কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাট থেকে সেই কাঁঠাল কেনেন ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বড় ব্যবসায়ীরা। তারপর সেই কাঁঠাল স্তূপ করে রেখে শ্রমিকদের দিয়েএক ধরনের কেমিক্যাল প্রয়োগ করান ,কেমিক্যাল প্রয়োগের জন্য প্রথমে কাঁঠালের মধ্যে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, তারপর সেখানে কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি দেওয়া হয়। তারপর সেই কাঁঠাল বিভিন্ন জেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক বলেন, এটা এমন একটা কেমিক্যাল যা দিলে রাতের মধ্যেই সব কাঁঠাল পেকে যাবে। কাঁঠালের মধ্যে চিকন একটি রড বা রিক্সা সাইকেল এর স্পোক বা শিক ঢোকাই, তারপর সামান্য পরিমাণ কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি দিই। সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মো. রুহুল আমিন মুকুল বলেন, ফল পাকানোর জন্য ক্লোরোইথিল ফসফোনিক অ্যাসিড, গ্লাইকল, ইথাল ইত্যাদি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। মানবদেহের জন্য যে কোনো ধরনের কেমিক্যাল ক্ষতিকর। কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল খেলে বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ।
বিশেষে করে কিডনি ড্যামেজ, কিডনিতে পাথর, হাড় ক্ষয়সহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন কেমিক্যালযুক্ত কোনো ফল খেলে যে কোন ধরনের ক্যান্সার ঝুঁকি রয়েছে। তাই কেমিক্যালযুক্ত খাবার না খাওয়াবাদ দেওয়াই উত্তম। যারা এই কেমিক্যাল প্রয়োগ করে তাদের চামড়া পুড়ে যেতে পারে, চোখে লাগলে অন্ধ যেতে পারে।
উপজেলার মহানন্দপুর হাটে হায়দার নামে এক খুচরা কাঁঠাল বিক্রেতা বলেন, এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে কাঁঠালের ফলন কম হয়েছে তারপরও অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের দাম অনেকটা কম।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আসলে কাঁঠালের দামের কোনো ধরাবাদা নিয়ম নেই, যার কাছ থেকে যে ভাবে ক্রয় করা যায়। কাঁচামাল হিসেবে অর্ধেক লাভ হিসাব করে কাঁঠাল ক্রয় করতে হয়। বড় কাঁঠালের চেয়ে মিডিয়াম সাইজের কাঁঠালের দাম একটু বেশি পাওয়া যায়, এই সাইজের কাঁঠালের চাহিদা বেশি থাকে। স্বাস্থ্য ও পুষ্ঠি বিষেসজ্ঞরা বলেন, যে কোন ধরনের ফল দ্রুত পাকানোর জন্য যা দেওয়া হয় তা অবশ্যই ক্ষতিকর। সেই জন্য আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থাকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
বিপি-৯পি
Leave a Reply