ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এখন একটি নতুন সম্ভাব্য সংঘাতের দিকে তাকিয়ে আছেন। অর্থাৎ, দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি।
স্টিমসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড সতর্ক করে বলেছেন যে যুদ্ধবিরতি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, দ্বিপাক্ষিক জলনীতি নিয়ে কার্যকর আলোচনাও ততটাই জরুরি। এক সাক্ষাৎকারে এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড বলেছেন যে এই সংঘাত পারমাণবিক যুগের সবচেয়ে গুরুতর সংঘাত। তিনি আরও বলেন যে এই যুদ্ধবিরতির কোনও নিশ্চয়তা নেই। গত ২৪ ঘন্টায় পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়েছে, পারমাণবিক যুগে এটি দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুতর সংকট।
তিনি বলেন যে এখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি মধ্যস্থতার জন্য সঠিক সময়। কারণ যদি দুই পরাশক্তির মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আবার বন্ধ হয়, তবে একমাত্র উপায় হল আলোচনায় আসল বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা।
বর্তমান পরিস্থিতির একটি প্রধান দিক হল নদীর প্রবাহ, যদিও বর্তমানে প্রচুর, আগামী মাসগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এই প্রসঙ্গে, থ্রেলকেল্ড বলেন যে ভারতের এখনও এই অতিরিক্ত জলকে অর্থপূর্ণভাবে সরিয়ে নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। তবে, ভবিষ্যতে যদি তারা এই ক্ষমতা অর্জন করে, তাহলে শুষ্ক মৌসুমে জল নিয়ে বিরোধ তীব্র হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক আলোচনায় যদি জল বণ্টন একটি উচ্চ এজেন্ডা না হয়, তাহলে যুদ্ধবিরতি অর্জন সাময়িক হতে পারে। কারণ ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কৃষিকাজ এবং জনগণের জন্য জল সরবরাহের জন্য নদীর উপর নির্ভরশীল। জল সংকট কেবল পরিবেশগত নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা হুমকিতে পরিণত হতে পারে।
যদিও যুদ্ধবিরতি এখন পর্যন্ত স্বস্তি এনে দিয়েছে, এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড এবং অন্যান্য বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে প্রকৃত রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে খুশি হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাও এখন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি কেবল সামরিক যুদ্ধবিরতি নয়, তবে জল, সীমান্ত, সন্ত্রাসবাদ এবং কাশ্মীরের চারটি প্রধান সমস্যার সমাধান ছাড়া – শান্তি কেবল একটি অস্থায়ী ‘বিরতি’ হবে।
সূত্র: আল জাজিরা
ইত্তেফা/টিএস
Leave a Reply